রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাঃ
ইনক্লুশন বডি হেপাটাইটিস: অসুস্থ কবুতরের বমির সাহায্যে এ সংক্রামক রোগ খামারের অন্যান্য সুস্থ কবুতরে বিস্তার লাভ করে। এ রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৪০-১০০ ভাগ। দূর্গন্ধযুক্ত বাদামী বা সবুজ ডায়রিয়া, ঝিমানো, খাবারে অনীহা, শুকিয়ে যাওয়া, বমি করা এবং হঠাৎ মারা যাওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। এ রোগের কোন চিকিৎসা না থাকার দরুণ আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলাই রোগের বিস্তার রোধ এবং প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
বসন্তঃ সাধারণত শরীরের পালকবিহীন অংশ যেমন- চোখ বা মুখের চারিদিক, পা ইত্যাদি জায়গায় এ রোগের ফোষ্কা বা গুটি দেখা যায়। আক্রান্ত কবুতরের চোখের পাতা ও চোখ ফুলে যায়, লাল হয়ে যায়, (conjunctivitis) এবং পানি পড়ে। আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে উৎপনড়ব হওয়া ফোষ্কা বা গুটিগুলোকে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনবার করে আয়োডিন যৌগ যেমনপভিতে সপ বা আয়োসান দিয়ে মুছে দিতে হবে। কোন চিকিৎসা না থাকার দরুণ খামারের জৈবনিরাপত্তা রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
সালমোনেলোসিসঃ আক্রান্ত পিতামাতা থেকে ডিমের মাধ্যমে এবং খাবার, পানি, খামারে ব্যবহৃত বিভিনড়ব যন্ত্রপাতি, কর্মরত শ্রমিক ও আগত অন্যান্য লোকজন, খাদ্য সরবরাহের গাড়ি, বন্যপ্রাণী যেমন ইদুঁর ইত্যাদির মাধ্যমে খামারে এ সংক্রমক রোগের প্রাদূর্ভাব ঘটে। শতকরা ৫-৫০ বা তারও বেশী কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত কবুতরের ডায়রিয়া, শুকিয়ে যাওয়া, পা এবং পাখায় প্যারালাইসিস এবং ডিম পাড়ার সমস্যা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। আক্রান্ত কবুতর খামার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
এসপারজিলোসিসঃ আক্রান্ত কবুতর থেকে শ্বাস প্রশ্বাস মাধ্যমে সুস্থ কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। এ ছত্রাকজনিত রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে। শ্বাস কষ্ট, ঝিমানো, শুকিয়ে যাওয়া, খাবারের প্রতি অনীহা, ওজন কমে যাওয়া এবং ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। কার্যকরী ছত্রাক বিরোধী ঔষধ যেমন Amphotericine দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। রোগ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত কবুতর খামার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং খামারের জৈবনিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
রক্ত আমাশয়ঃ বিভিন্ন প্রজাতির প্রটোজোয়া দ্বারা এ রোগ হতে পারে। সংক্রামিত খাবার, পানি বা লিটার থেকে মুখের মাধ্যমে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। রক্ত মিশ্রিত ডায়রিয়া, ক্ষুধামন্ধা এবং ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি এ রোগের প্রধান লক্ষণ। রোগ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত কবুতর কার্যকরী জীবাণুনাশক দিয়ে শেড ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং কঠোর জৈবনিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে।
ক্যাঙ্কারঃ আক্রান্ত বয়ষ্ক পিতামাতা কবুতর থেকে দুধের মাধ্যমে বাচ্চায় প্রটোজোয়া এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত জীবিত কবুতর সারাজীবন এ রোগের জীবাণু বহন করে। মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। আক্রান্ত কবুতর অস্থির থাকে, পাখা উশকু-খুশকু হয়ে যায়, খাদ্য গ্রহণ কমে যায় এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে মারা যায়। আক্রান্ত কবুতরের মুখের চারিদিকে সবুজাভ বা হলুদ লালা লেগে থাকে। আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। এই রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
Pigeon Farm - কবুতরের খামার |
খামার হতে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার এবং রোগের হাত থেকে রক্ষার জন্য খামারের জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ন।
১। কবুতর উঠানোর আগে খামারসহ ব্যবহার্য্য সকল যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। প্রথমে পানি দিয়ে পানির সাথে কার্যকরী জীবানুনাশক (০.২-০.৫% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড বা আয়োডিন দ্রবণ) মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
২। সুস্থ্য সবল কবুতর সংগ্রহ করতে হবে। প্রয়োজনে বাহ্যিক পরজীবি নিধনের জন্য ০.৫% ম্যালাথিয়ন দ্রবণে কবুতরকে গোসল করিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কবুতরের মুখ এই দ্রবণে ডুবানো যাবে না। হাত দিয়ে মাথায় লাগিয়ে দিতে হবে। অন্তঃপরজীবি প্রতিরোধের জন্য কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করাতে হবে।
৩। কবুতরের খোপ, দানাদার খাদ্য ও খনিজ মিশ্রণ সরবরাহের পাত্র, পানির পাত্র ও গোসল করার পাত্র এবং কবুতর বসার স্ট্যান্ড নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। জীবাণুমুক্ত খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে।
৪। খামারে মানুষের এবং বন্য পাখি ও ইঁদুর জাতীয় প্রাণী যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিবার খামারে প্রবেশ করার পূর্বে এবং খামার হতে বাহির হওয়ার সময় হাত ও পা অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৫। কোন কবুতর অসুস্থ হলে দ্রুত আলাদা করে ফেলতে হবে। অসুস্থ বা মৃত কবুতর এর রোগের কারণ জেনে অন্যান্য জীবিত কবুতরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
টিকা প্রদানঃ
খামারে রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কবুতরের প্রজননকালীন সময়ে প্যারেন্ট কবুতর গুলোকে রাণীক্ষেত রোগের মৃত টিকা প্রয়োগ করা উত্তম। টিকা প্রয়োগের কমপক্ষে ৩ সপ্তাহ পর বাচ্চা ফুটানোর জন্য ডিম সংগ্রহ করতে হবে। তবে বাচ্চা কবুতর উড়তে শেখার সাথে সাথেও টিকা প্রয়োগ করা যায়। জীবিত বা মৃত উভয় টিকাই প্রয়োগ করা যায়। জীবিত টিকা চোখে এবং মৃত টিকা চামড়ার নীচে বা মাংসপেশীতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম টিকা (জীবিত) প্রয়োগের কমপক্ষে ১৪ দিন পর দ্বিতীয় বা বুস্টার ডোজ দিতে হবে।
কবুতরের রোগ বালাইঃ
বিভিন্ন প্রকার রোগ জীবাণু দ্বারা কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত খাদ্য এবং পানির মাধ্যমে জীবাণু কবুতরের দেহে প্রবেশ করে। তাছাড়া অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডাজনিত পীড়নের কারণেও অনেক সময় কবুতর দূর্বল ও অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। কবুতরের সংক্রামক রোগ এবং ছত্রাকজনিত রোগ এছাড়া ভিটামিন বা খনিজ লবণের অভাব জনিত রোগ, বদহজম জনিত সমস্যা, গেঁটেবাত, অন্তঃপরজীবি যেমন কৃমি এবং বাহ্যিক পরজীবি যেমনঃ মাছি, উকুন ইত্যাদি দ্বারাও কবুতর আক্রান্ত হতে পারে।
রাণীক্ষেতঃ এ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কবুতর থেকে সুস্থ কবুতরে এ রোগের জীবাণুর বিস্তার ঘটে। এ রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ১০ ভাগ। সবুজ ডায়রিয়া এবং প্যারালাইসিস ইত্যাদি এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। কবুতরকে জীবিত বা মৃত টিকা প্রয়োগ এবং খামারের জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।ইনক্লুশন বডি হেপাটাইটিস: অসুস্থ কবুতরের বমির সাহায্যে এ সংক্রামক রোগ খামারের অন্যান্য সুস্থ কবুতরে বিস্তার লাভ করে। এ রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৪০-১০০ ভাগ। দূর্গন্ধযুক্ত বাদামী বা সবুজ ডায়রিয়া, ঝিমানো, খাবারে অনীহা, শুকিয়ে যাওয়া, বমি করা এবং হঠাৎ মারা যাওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। এ রোগের কোন চিকিৎসা না থাকার দরুণ আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলাই রোগের বিস্তার রোধ এবং প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
বসন্তঃ সাধারণত শরীরের পালকবিহীন অংশ যেমন- চোখ বা মুখের চারিদিক, পা ইত্যাদি জায়গায় এ রোগের ফোষ্কা বা গুটি দেখা যায়। আক্রান্ত কবুতরের চোখের পাতা ও চোখ ফুলে যায়, লাল হয়ে যায়, (conjunctivitis) এবং পানি পড়ে। আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে উৎপনড়ব হওয়া ফোষ্কা বা গুটিগুলোকে প্রতিদিন কমপক্ষে তিনবার করে আয়োডিন যৌগ যেমনপভিতে সপ বা আয়োসান দিয়ে মুছে দিতে হবে। কোন চিকিৎসা না থাকার দরুণ খামারের জৈবনিরাপত্তা রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
সালমোনেলোসিসঃ আক্রান্ত পিতামাতা থেকে ডিমের মাধ্যমে এবং খাবার, পানি, খামারে ব্যবহৃত বিভিনড়ব যন্ত্রপাতি, কর্মরত শ্রমিক ও আগত অন্যান্য লোকজন, খাদ্য সরবরাহের গাড়ি, বন্যপ্রাণী যেমন ইদুঁর ইত্যাদির মাধ্যমে খামারে এ সংক্রমক রোগের প্রাদূর্ভাব ঘটে। শতকরা ৫-৫০ বা তারও বেশী কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত কবুতরের ডায়রিয়া, শুকিয়ে যাওয়া, পা এবং পাখায় প্যারালাইসিস এবং ডিম পাড়ার সমস্যা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। আক্রান্ত কবুতর খামার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
এসপারজিলোসিসঃ আক্রান্ত কবুতর থেকে শ্বাস প্রশ্বাস মাধ্যমে সুস্থ কবুতর আক্রান্ত হতে পারে। এ ছত্রাকজনিত রোগে মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে। শ্বাস কষ্ট, ঝিমানো, শুকিয়ে যাওয়া, খাবারের প্রতি অনীহা, ওজন কমে যাওয়া এবং ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। কার্যকরী ছত্রাক বিরোধী ঔষধ যেমন Amphotericine দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। রোগ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত কবুতর খামার থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং খামারের জৈবনিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
রক্ত আমাশয়ঃ বিভিন্ন প্রজাতির প্রটোজোয়া দ্বারা এ রোগ হতে পারে। সংক্রামিত খাবার, পানি বা লিটার থেকে মুখের মাধ্যমে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। রক্ত মিশ্রিত ডায়রিয়া, ক্ষুধামন্ধা এবং ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি এ রোগের প্রধান লক্ষণ। রোগ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত কবুতর কার্যকরী জীবাণুনাশক দিয়ে শেড ভালভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং কঠোর জৈবনিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে।
ক্যাঙ্কারঃ আক্রান্ত বয়ষ্ক পিতামাতা কবুতর থেকে দুধের মাধ্যমে বাচ্চায় প্রটোজোয়া এ রোগের সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্ত জীবিত কবুতর সারাজীবন এ রোগের জীবাণু বহন করে। মৃত্যুহার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। আক্রান্ত কবুতর অস্থির থাকে, পাখা উশকু-খুশকু হয়ে যায়, খাদ্য গ্রহণ কমে যায় এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে মারা যায়। আক্রান্ত কবুতরের মুখের চারিদিকে সবুজাভ বা হলুদ লালা লেগে থাকে। আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। এই রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।